রূপকথাকে হার মানায় ভাওয়াল রাজার বাস্তব কাহিনী
প্রকাশিত: ১০ নভেম্বর ২০২২
সন্ন্যাসী রাজা রমেন্দ্রনারায়ণ। তার রহস্যময় মৃত্যু এবং প্রত্যাবর্তন এ দেশে শেষ রাজার ইতিহাসকে করেছে রহস্যময়। রমেন্দ্রনারায়ণের জন্ম ও বেড়ে ওঠা রাজ পরিবারে।
বিলাশবহুল তারুণ্যে বিয়ে করেন। বাবা রাজেন্দ্রনারায়ণের মেজো পুত্র রমেন্দ্রনারায়ণ। রাজমাতা, রানী বিলাসমণি ছিলেন তেজস্বিনী ও দূরদর্শীসম্পন্না একজন মা। সেই কারণে রানীমাতা হিসেবে নিজ পরগনার প্রজাদের কাছে ছিলেন জনপ্রিয়।
রাজা রাজেন্দ্রনারায়ণ ছিলেন ভোগ-বিলাসে মত্ত। রাজ্য পরিচালনা তো দূরে থাক নিজেকেই গুছিয়ে রাখতে পারতেন না তিনি। রাজমাতা বিলাসমণিই প্রকৃত অর্থে জমিদারি দেখভাল করতেন। এস্টেটের ম্যানেজার বিখ্যাত সাহিত্যিক কালীপ্রসন্ন ঘোষ সে সময় নিজের বিত্ত-বৈভব বৃদ্ধিতে মনোযোগ দেন।
নিজের তিন পুত্রসন্তানকে সুশিক্ষা দিতে চেয়েছিলেন রাজমাতা। কুমারদের মিস্টার হোয়াটন নামক একজন শিক্ষক নিযুক্ত করেন। কিন্তু কুমারদের অবস্থা বিশেষ আশাব্যঞ্জক ছিল না। মেজো কুমার রমেন্দ্রনারায়ণ ব্যতিক্রম ছিলেন না।
১৯০১ সালে বাবা রাজা রাজেন্দ্রনারায়ণের মৃত্যু হয় এবং রানী বিলাসমণি জমিদারি নিজ হাতে তুলে নেন। মাত্র এক বছর পরেই মেজো কুমার রমেন্দ্রনারায়ণের বিয়ে হয় অপূর্ব সুন্দরী বিভাবতীর সঙ্গে। ভাওয়াল রাজবাড়িতে বিভাবতী তেমন সুখী ছিলেন না। মেজো কুমার কুৎসিত ব্যাধিতে আক্রান্ত ছিলেন, তিনি তেমন কোনো কাজ করতেন না।
১৯০৭ সালে রাজমাতা রানী বিলাসমণির মৃত্যু হলে ভাওয়াল রাজপরিবারে প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের বীজ বপন হয়। এরপর ১৯০৮ সালে রানী বিভাবতীর ভাই সত্যেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ভাওয়াল রাজবাড়িতে প্রবেশ করেন। শিলং এ ডেপুটির চাকরি নিতে এসে সত্যেন্দ্র রাজ্য পরিচালনায় কার্যত জড়িয়ে পড়েন।
মেজো কুমারকে কলকাতায় চিকিৎসা করতে নেয়া হয়। বড় কুমার ও তার স্ত্রী, মেজো কুমার ও বিভাবতীর সঙ্গে গিয়েছিলেন। এরপর ১৯০৯ সালের ১৮ এপ্রিল মেজো কুমার, মেজো রানী, তার ভাই সত্যেন্দ্র, আশুতোষ ডাক্তারসহ প্রায় ২০ জনের দল নিয়ে দার্জিলিংয়ে রওনা হন এবং ২০ এপ্রিল এসে পৌঁছান। মে মাসের ৫ তারিখের দিকে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। ৮ মে স্থানীয় ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের ডাক্তার ক্যালভার্ট মেজো কুমারের যন্ত্রণা দেখে মরফিয়া ইনজেকশন দিতে চাইলেন কিন্তু মেজো কুমার রাজি হননি। মেজো কুমারের শারীরিক অবস্থা নিয়মিত দার্জিলিং থেকে টেলিগ্রাম করে জানানো হচ্ছিল। রানী বিভাবতীর মামা বিবি সরকার নামে একজন ডাক্তার নিয়ে এসে মেজো কুমারের অবস্থা দেখে যান। তখন মেজো কুমারের অবস্থা বিশেষ ভালো নয়, গা শীতল হয়ে গেছে। ডাক্তার সরকার মেজো কুমারকে মৃত বলে ঘোষণা করে গিয়েছিলেন বলে জানা গেলেও স্ত্রী বিভাবতী সেটা পরবর্তীতে অস্বীকার করেন।
এখানে একটি রহস্যের সৃষ্টি হয়, মেজো কুমার কখন মারা গিয়েছিলেন? সন্ধ্যায় নাকি মাঝরাতে? স্টপ অ্যাসাইড বাড়ির দারোয়ানসহ অনেকেই বলেছেন, মেজো কুমার সন্ধ্যায় মারা গিয়েছিলেন অথচ মেজো রানী ও তার ভাই সত্যেন্দ্র সবসময় বলে এসেছেন মেজো কুমার মাঝরাতে মারা গিয়েছিলেন। সে যাই হোক, ১০ মে সকালে মেজো কুমারের মৃত্যুর খবর টেলিগ্রাম করে সবাই দার্জিলিং ত্যাগ করে জয়দেবপুরের উদ্দেশে রওনা করেন। ১১ মে মধ্যরাতে মেজো রানী জয়দেবপুরে ফিরে আসেন। রাজবাড়িতে শোকের ছায়া নেমে আসে।
১৮ মে মেজো কুমারের শ্রাদ্ধ করা হয়েছিল। এ সময় গুজব ছড়িয়ে গেল মেজো কুমার রমেন্দ্রনারায়ণের মৃতদেহের শ্রাদ্ধ নাকি ঠিকভাবে করা হয়নি। কোনোমতে গুজব এড়িয়ে শ্রাদ্ধ করা হলেও গুজবটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ল।
মাত্র তিন বছরের ব্যবধানে ছোটকুমার ও বড় কুমার মারা গেলে রাজবাড়ি ফাঁকা হয়ে যায়। রাজবাড়ির তিন রানীই ছিলেন সন্তানহীনা এবং তারা সবাই কলকাতায় পাড়ি জমান।
রাজবাড়ির ভেতরে মাধববাড়িতে একজন মৌনসন্ন্যাসীর আবির্ভাব ঘটে। শুরু হয় নতুন উত্তেজনা। চারদিকে খবর ছড়ায় ভাওয়াল রাজ মেজো কুমার ফিরে এসেছেন। জনসাধারণ, প্রজা, ভাওয়াল এস্টেটের কর্মচারীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ে সন্ন্যাসীকে দেখতে। ১৯২১ সালে ঢাকার বাকল্যান্ড বাঁধের কাছে তার দেখা পাওয়া যায়।
শুরুতে আত্মপরিচয় দেননি। একপর্যায়ে ঢাকা থেকে বাঁধিয়ে আনা অন্য কুমারদের ছবিগুলো সন্ন্যাসীকে দেখতে দেওয়া হলে সন্ন্যাসী কাঁদতে আরম্ভ করেন। তার কান্না দেখে জ্যোতির্ময়ী দেবীও কেঁদে ফেলেন। পরে অষ্টমী স্নান উপলক্ষে সন্ন্যাসী ঢাকায় ফিরে যান। ৩০ এপ্রিল সন্ন্যাসী চন্দ্রনাথ আর সীতাকুণ্ড থেকে আবার জয়দেবপুরে রাজবাড়িতে ফিরে আসেন। তার দুদিন পরেই চিলাইখালে সন্ন্যাসী স্নান করতে গেলে জ্যোতির্ময়ী দেবী সন্ন্যাসীর গায়ে মেজো কুমারের বিশেষ দাগগুলো দেখতে পান।
এর আগেই সন্ন্যাসীর আচরণ, কথন, চাহনি, গায়ের প্রকৃত রং, চেহারা ইত্যাদি মেজো কুমারের সঙ্গে বিশেষ মিল থাকায় সন্ন্যাসীকে কথিত মৃত মেজো কুমার রমেন্দ্রনারায়ণ বলে যে সন্দেহ করা হয়েছিল, গায়ের কাটা দাগ ও কয়েকটি জন্মগত দাগ হুবহু মিলে যাওয়ায় জ্যোতির্ময়ী দেবী সরাসরি সন্ন্যাসীর পরিচয় প্রকাশ করতে ব্যাপক চাপ দেন।
জ্যোতির্ময়ী দেবীর প্রশ্ন ভাওয়াল পরগনার হাজারো প্রজার মনের প্রশ্ন হয়ে সন্ন্যাসীর সামনে এসে দাঁড়ায়। রাজপরিবারের সদস্য এবং প্রজারা সন্ন্যাসীর উত্তরের জন্য রাজবাড়িতে ভিড় করে। সারা জয়দেবপুরে রটে যায় এ খবর। সেদিন সকালেই হাজারো প্রজার সামনে জ্যোতির্ময়ী দেবী সন্ন্যাসীকে বলেন, তোমার চেহারা আর শরীরের চিহ্নগুলো আমার মেজো ভাইয়ের সঙ্গে হুবহু মিলে যায়। তুমিই আমার নিরুদ্দিষ্ট মেজো কুমার। তোমার পরিচয় প্রকাশ কর। উপস্থিত জনতা তখন অধীর হয়ে অপেক্ষা করছিল সন্ন্যাসী কী জবাব দেন। কিন্তু সন্ন্যাসী তখনই কোনো জবাব দেননি।
শেষ বিকালের দিকে জনতার কৌতূহলের অবসান ঘটিয়ে সন্ন্যাসী বলতে শুরু করেন_ আমার নাম রমেন্দ্রনারায়ণ রায় চৌধুরী। উৎসুক জনতার মাঝ থেকে প্রশ্ন আসে তোমার মায়ের নাম কী? সন্ন্যাসী জবাব দেন, রানী বিলাসমণি। আবারও প্রশ্ন আসে আপনাকে যে মানুষ করেছিল সেই দাইয়ের নাম কী? মৃদু কম্পমান গলায় সন্ন্যাসী উত্তর করেন, অলকা। ধাত্রী মায়ের নাম বলেই সন্ন্যাসী অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান।
কলকাতা থেকে প্রকাশিত ইংলিসম্যান কাগজে ৭ মে ঢাকা সেনসেশন শিরোনামে সন্ন্যাসী নিজেকে ভাওয়াল রাজা মেজো কুমার বলে দাবি করেছেন বলে খবরটি প্রচার করেছিল। জ্যোতির্ময়ী দেবীর পাশাপাশি রানী সত্যভামা দেবী যখন সন্ন্যাসী মেজো কুমার বলে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন স্ত্রী বিভাবতী তখন পর্যন্ত সন্ন্যাসীর কোনো খোঁজখবর নেননি।
কলকাতায় এসে বড় রানী সূর্যবালা দেবীর সঙ্গে সন্ন্যাসীর দেখা হয় এবং বড় রানীও তাকে মেজো কুমার বলে গ্রহণ করে নেন। নিজ স্ত্রী বিভাবতী, তার ভাই সত্যেন্দ্রনাথ ও হাতেগোনা কয়েকজন ষড়যন্ত্রকারী ছাড়া সবাই সন্ন্যাসীকে মেজো কুমার বলে গ্রহণ করেছিল। ১৯২৬ সালের ৮ ডিসেম্বর সন্ন্যাসী বোর্ড অব রেভিনিউর কাছে দাবি করেন, তার পরিচয় তদন্ত করা হোক। বোর্ড সে দাবি অগ্রাহ্য করেছিল।
১৯২৯ সালে সন্ন্যাসী ঢাকায় ফিরে আসেন এবং ১৯৩০ সালের ২৪ এপ্রিল নিজেকে মৃত রাজা রমেন্দ্রনারায়ণ বলে দাবি করে ভাওয়াল এস্টেটের জমিদারি চেয়ে আদালতে মামলা করেন। প্রতিবাদী ছিলেন রানী বিভাবতী, তবে কলকাঠি নেড়েছিলেন তার ভাই সত্যেন্দ্রনাথ ও আশু ডাক্তার। চার বছর পর এ ঐতিহাসিক মামলাটির শুনানি শুরু হয়। দেশের বাইরে বিলাতে এর কমিশন গঠন করা হয়েছিল। আদালতে মোট ১০৬৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছিল, এর মাঝে ৯৬৭ জন সন্ন্যাসীকে মেজো কুমার বলে সাক্ষী দিয়েছিল। কুমারের নিকটাত্দীয়দের প্রায় সবাই সাক্ষী দেন তিনিই প্রয়াত মেজো কুমার এমনকি মেজো রানী বিভাবতীর আত্দীয়দের অনেকেই সন্ন্যাসীর পক্ষে সাক্ষী দিয়েছিলেন। প্রতিবাদিনীর ষড়যন্ত্র কোনোভাবেই আর আদালতে টিকতে পারছিল না।
ইতিহাসে উল্লেখ আছে, মেজো কুমার রমেন্দ্রনারায়ণের উচ্চতা, জামার মাপ, জুতার মাপ, চুলের রং, শরীরের বিশেষ চিহ্নগুলোর সবই সন্ন্যাসী মেজো কুমার বলে প্রতীয়মান হন। বিশেষ করে ডাক্তাররা মেজো কুমারের শরীরে যে কয়েকটা বিশেষ জন্মগত দাগ, তিল, ফোঁড়ার দাগ ও দুর্ঘটনার ফলে আঘাতের চিহ্ন রয়েছিল তার সবগুলোই হুবহু খুঁজে পান। প্রতিবাদিনীর ব্যারিস্টারের কোনো যুক্তিতর্কই আদালতে টিকল না। আদালত সবশেষে সন্ন্যাসীর বক্তব্য চাইলেন। সন্ন্যাসী ধীরে ধরে বলে গেলেন অভূতপূর্ব, অবিশ্বাস্য এবং রোমাঞ্চকর সে ঘটনা_ দার্জিলিংয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ার পর শেষ যা মনে আছে তিনি বলতে লাগলেন, আমার পেট ফাঁপত। আশু ডাক্তার সেদিন ওষধু দেওয়ার পর কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠেছিলাম। কিন্তু পর দিন আবারও যন্ত্রণায় কাতর হয়ে পড়েছিলাম। আশু ডাক্তার কাচের গ্লাসে আমাকে কী একটা ওষুধ খেতে দিয়েছিলেন। সেটা খাওয়ার পর বুকজ্বালা করতে লাগল, বমি হলো, সারা শরীর ছটফট করতে লাগল। পর দিন শরীর আরও খারাপের দিকে গেল, আমি যে দুর্বল হয়ে পড়ছিলাম সেটা খুব ভালোভাবেই টের পাচ্ছিলাম। একসময় অজ্ঞান হয়ে পড়ি যখন চোখ মেলি দেখি পাশে চারজন সন্ন্যাসী দাঁড়িয়ে আছেন। আমি জানতে চেয়েছিলাম, আমি কোথায়? তারা ইশারায় ও মৃদু স্বরে আমাকে হিন্দিতে জবাব দিয়েছিলেন কথা না বলতে। সুস্থ হয়ে উঠলে আমি সন্ন্যাসীদের সঙ্গে হেঁটে ও ট্রেনে চেপে বহু দেশ-বিদেশ ঘুরতে থাকি। আমি মাঝেমধ্যেই আমার গুরুকে জিজ্ঞেস করতাম, বাড়ি ফেরার কথা বলতাম, গুরু জবাব দিতেন, সময় হলেই যাবি।
আমি এভাবে বহু বছর এদেশ-ওদেশ বেড়িয়ে নেপালে গিয়ে পৌঁছলাম। সেখান থেকে তিব্বত। আবার নেপালে ফিরে আসার পথে গুরু বললেন, তোর বাড়ি ফেরার সময় হয়েছে। আমি গৌহাটি থেকে ট্রেনে চেপে ফুলছড়ি হয়ে ঢাকা আসি। বাকল্যান্ড বাঁধের কাছে আমি বসে থাকতাম। অনেকেই আমাকে ভাওয়াল রাজা বলে ভিড় জমাত। আমি জয়দেবপুরে হাতির পিঠে চেপে ফিরে আসি।... সন্ন্যাসীর বিবরণের পাশাপাশি পারিবারিক অতীত ঘটনা সম্বন্ধীয় নানা জেরা করা হয়, আদালতে তিনি সবগুলো প্রশ্নেরই ঠিক জবাব দিতে পেরেছিলেন। ছোটবেলার নানা ঘটনা, পারিবারিক আচার-অনুষ্ঠানের বিবরণ কিছুই বাদ যায়নি। মেজো কুমার রমেন্দ্রনারায়ণ রায় সন্ন্যাসী বেশে দীর্ঘর্ ১২ বছর পর ফিরে এসে আদালতে যখন নিজ অতীতের নিখুঁত বর্ণনা দিলেন, তখন আর কারোই বুঝতে বাকি থাকল না তিনি নিঃসন্দেহে ঠক বা প্রতারক নন। এবার আদালত সন্ন্যাসী গুরু ও তার দলের লোকদের কাছে মূল ঘটনাটি শুনতে চান।
সন্ন্যাসী গুরু ধরম দাস নাগা তার সাক্ষ্যতে বলেন- আমরা মোট চারজন সন্ন্যাসী ঘুরতে ঘুরতে দার্জিলিং এসে পড়েছিলাম। রাতের প্রথম প্রহরে আমরা যখন ধর্মালোচনা করছিলাম তখন এক আশ্চর্য ঘটনা ঘটে, আমরা গুহা থেকেই শুনতে পাচ্ছিলাম একদল লোক হরিবোল ধ্বনি নিতে শ্মশানে জমায়েত হয়েছে। কিছুক্ষণ বাদে আমিও লণ্ঠন নিয়ে গুহা ছেড়ে বাইরে আসি এবং শ্মশানের কোথাও থেকে মানুষের কাতরানোর আওয়াজ শুনতে পাই । কাতরানোর আওয়াজ খুঁজে পেয়ে দেখি এক লোক খাটিয়ার ওপর শুয়ে আছে। সে জ্বরে এবং ঠাণ্ডায় কাঁপছিল। গুরু লোকটার নাকে হাত দিয়ে বলেন, লোকটা বেঁচে আছে, একে ধরো, গুহায় নিয়ে চলো। পাহাড়ের নিচ দিকে একটা ঘর ছিল, বৃষ্টি ক্রমেই বাড়ছে বলে আমরা তাকে নিয়ে ওই ঘরটার কাছে নিয়ে যাই। ঘরে তালা লাগানো ছিল, কিন্তু কাউকে না দেখে লোকনাথ বাবা বললেন, তালা ভেঙে ফেল। পর দিন লোকটির জ্ঞান ফিরে এলেও সে কোনো পরিচয় দিতে পারছিল না। পুরো ঘটনাটি অন্য দুই সন্ন্যাসী আদালতে আলাদাভাবে উপস্থাপন করেছিলেন। এতে দেখা যায়, ধরম দাস নাগার সাক্ষ্যের সঙ্গে অন্যদের সাক্ষ্যেরও মিল আছে। ১৯৩৬ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বিবাদী পক্ষের ব্যারিস্টার এ এন চৌধুরী শুনানি শুরু করে শেষ করেন ৩১ মার্চ। আর সেদিনই বাদীপক্ষের ব্যারিস্টার বি এস চ্যাটার্জি শুনানি শুরু করেন। এরপর ১৯৩৬ সালের ২৪ আগস্ট বিচারপতি পান্না লাল বসু ভাওয়াল রাজবাড়ির সন্ন্যাসী মামলাটির ঐতিহাসিক রায় দেন। দীর্ঘ রায়ের সংক্ষিপ্ত বর্ণনায় তিনি বলেন, বাদীকে শনাক্ত করার জন্য প্রমাণ ছিল তার দেহের কতগুলো চিহ্ন, যেগুলো অঙ্কের মতোই নির্ভুলভাবে প্রমাণিত। দুজন ব্যক্তির একই রকম চেহারা থাকতে পারে, কিন্তু দুজনের দেহে একই দাগ হুবহু মিলে যেতে পারে না। আমি বিচারে এই সাব্যস্ত করছি যে, বাদীই ভাওয়ালের মৃত রাজা রাজেন্দ্রনারায়ণ রায়ের দ্বিতীয় পুত্র রমেন্দ্রনারায়ণ রায়। মামলার রায়ের সঙ্গে সঙ্গেই আদালত প্রাঙ্গণে সমবেত জনতা ঢাকার আরমানিটোলা বাড়ির দিকে ছুটতে থাকে। সেই বাড়িতে সন্ন্যাসী ছাড়াও জ্যোতির্ময়ী দেবী তখন ছিলেন। ঢাকার পথে ভাওয়াল রাজার জয়ধ্বনিতে শোভাযাত্রা হয়। পরে রানী বিভাবতীর ভাই সত্যেন্দ্রনাথ কলকাতার হাইকোর্টে ১৯৪০ সালে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন। সেটাও ১৯৪৬ সালের ৩০ জুলাই আদালত খারিজ করে দেন এবং সন্ন্যাসীকে মেজো কুমার বলে ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে আদালত ভাওয়াল এস্টেটের এক-তৃতীয়াংশ আইন মতে তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
স্ত্রী বিভাবতী ও অন্য ষড়যন্ত্রকারীরা ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান। কিন্তু তারা সন্ন্যাসীকে মেজো কুমার বলে মেনে নেননি। পরবর্তীতে ভাওয়াল সন্ন্যাসীখ্যাত মেজো কুমার রমেন্দ্রনারায়ণ ধরাসুন্দরী নামক এক নারীকে বিয়ে করেছিলেন। ভাওয়াল রাজ এস্টেট ফিরে পেয়ে সন্ন্যাসী খুব বেশিদিন ভাওয়াল এস্টেট পরিচালনা করতে পারেননি। ১৯৪৬ সালের ৫ আগস্ট তিনি মারা যান।
সূত্র: উইকিপিডিয়া এবং অন্যান্য
- আজও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে
- শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্ক রেখে উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
- গণতন্ত্র দখলকারীদের থেকে এখন গণতন্ত্রের সবক শুনতে হয়
- চিকিৎসকরা অফিস টাইমে হাসপাতালের বাইরে গেলে ব্যবস্থা
- রেডিয়েশন প্রয়োগে ঘরেই সংরক্ষণ করা যাবে পেঁয়াজ
- ‘অফিস টাইমে যে হাসপাতালের বাইরে যাবে, তার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা’
- ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে শ্রম আইন সংশোধন করা হচ্ছে : আইনমন্ত্রী
- সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশকে ১২১ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে এডিবি
- অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলা করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশ
- এআই প্রযুক্তিতে চলবে সরকারি অফিস
- চিকিৎসকদের দক্ষতা-সামর্থ্য আমাকে বিস্মিত করে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
- সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির ব্যর্থতার দায় ভোগ করতে হচ্ছে গ্রাহককে
- রেলপথে মাত্র ৪ ঘণ্টায় ঢাকা থেকে খুলনা, শুরু জুলাই থেকে
- মোবাইল ডেটা দ্রুত শেষ হচ্ছে? এই কাজ করলে বাঁচবে খরচ
- মমতার মন্তব্যের জবাব দিলেন মিঠুন
- ‘একজন অভিনেত্রীর ঝলমলে জীবনের পেছনে থাকে নানা চড়াই-উতরাই’
- বাংলাদেশের রেল উন্নয়নে সহযোগিতায় আগ্রহী রাশিয়া
- যেভাবে পাঠ্যসূচিতে স্থান পেল ‘কাজলরেখা’
- সৌদ-নীলাঞ্জনার প্রেমের গুঞ্জন!
- যে ফুলে মজেছেন দর্শক, জানুন তার পরিচয়
- মনোগামী: কেউ লাস্ট ডিফেন্ডার নয় কিংবা সবাই লাস্ট ডিফেন্ডার
- বাগদানের পরও যে কারণে কারিশমাকে বিয়ে করেননি অভিষেক?
- আবারও শাকিব খানের বিয়ের ইঙ্গিত দিলেন আরশাদ আদনান
- প্রবৃদ্ধির দৌড়ে চীন মালয়েশিয়ার চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ
- চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫-৩৭ বছর চান শিক্ষামন্ত্রী
- সর্বোচ্চ ১৬,৪৭৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড
- ভাঙ্গা-রাজবাড়ী-ঢাকা রুটে আসছে নতুন ২ জোড়া ট্রেন
- সরকার শ্রমিকের কল্যাণ সাধনে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে : রাষ্ট্রপতি
- মহান মে দিবসে সব মেহনতি মানুষকে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা
- মহম্মদপুরে সর্বজনীন পেনশন স্কীম উদ্বুদ্ধকরণ সভা অনুষ্ঠিত
- মধুখালী পরিদর্শনে দুই মন্ত্রী
- হজযাত্রীদের সহযোগীতার আশ্বাস সৌদির
- থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা
- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি আরও বাড়বে কি না, জানা যাবে শনিবারের মধ্যে
- মাগুরায় হজযাত্রীদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা
- তিলের খাজাসহ নতুন ১৪ পণ্য পেল জিআই সনদ
- এভিয়েশন শিল্পে সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাজ্য
- ছোট্ট এই ডিভাইস লাগালে বিদ্যুৎ বিল আসবে অর্ধেক
- দেশের ৫০ শতাংশ মানুষ হরমোনজনিত সমস্যায় ভুগছেন
- বে-টার্মিনালে বিনিয়োগ হবে দশ বিলিয়ন ডলার
- সারাকে ভুলে স্প্যানিশ সুন্দরীতে মজেছেন শুভমান?
- রোববার থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ
- ৩ শতাংশের বেশি শেয়ার দর কমতে পারবে না
- স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তা টেকসই উন্নয়নের পূর্বশর্ত: প্রধানমন্ত্রী
- মডেল ঘরে পেঁয়াজ সংরক্ষণ কৃষকের মধ্যে সাড়া
- ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে মে থেকেই অভিযান
- সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ
- আইনের আওতায় আসবে সব ধরনের অনলাইন সেবা
- যে ২৭ জেলায় স্কুল-কলেজ-মাদরাসা বন্ধ থাকবে আজ
- ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর প্রধান কারণ কোলোরেক্টাল ক্যান্সার
- পদ্মা সেতু: শেখ হাসিনা বিশ্বকে যে বার্তা দিলেন
- পদ্মা সেতু স্বাধীন জাতিরাষ্ট্রের একটা অসম্পূর্ণতা মিটিয়েছে
- একজন রেণু এবং এক সাহসী নারীর কথা
- রহস্যে ঘেরা হ্রদ, খনে খনে বদলে যায় পানির রং
- শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা ও আর্থিক খাতে অগ্রগতি
- শেখ হাসিনার চার দশক অনন্য উচ্চতায় বাংলাদেশ
- বঙ্গবন্ধুঃ বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্নদর্শন ও বাস্তবায়ন
- চোখটা এতো পোড়ায় কেন?
- নয়াপল্টনের হামলা কোন পক্ষের?
- বাংলাদেশে বাড়ছে নারী ক্ষমতায়ন
- আমাদের বাড়ি এবং মাধবীলতার স্মৃতি….. -অনন্যা হক
- ধন্যবাদ শিক্ষামন্ত্রী
- নিজের ইচ্ছায় পোশাক পরার স্বাধীনতা প্রত্যেক নারীর আছে
- ফরিদপুরে শিল্পী আবদুল জব্বারকে স্মরণ
- আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস নিয়ে কিছু কথা