বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১১ ১৪৩১   ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

 ফরিদপুর প্রতিদিন
১৬৫

রাজবাড়ীতে হুইট ব্লাস্ট রোগে গম নষ্ট, দিশেহারা কৃষক

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫ মার্চ ২০২৩  

রাজবাড়ী সদর উপজেলার রাজাপুর, শায়েস্তাপুর ও কৈজুরি মাঠের অন্তত ১৫ হেক্টর জমির গমে দেখা দিয়েছে হুইট ব্লাস্ট রোগ। এতে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন গম চাষিরা। কৃষি বিভাগ বলছে, তাদের পরামর্শ না মেনে কৃষকরা পুরনো জাতের বীজ বপন করায় দেখা দিয়েছে এ রোগ।

মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে গম সোনালি রঙের হয়ে গেছে। দেখে মনে হচ্ছে জমিতে গম পেকে গেছে। আসলে গমের বেশিরভাগ শীষে দানা নেই। শীষের সঙ্গে শুকিয়ে যাচ্ছে গাছও।

জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) কৃষকদের মাঝে ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী বারি ৩৩ জাতের বীজ সরবরাহ করলেও তা ছিল চাহিদার তুলনায় কম। ফলে কৃষকরা বারি ২৮ ও ২৯সহ বিভিন্ন পুরনো জাতের বীজ বপন করেন। এসব পুরনো জাতের বীজ বপন করায় বিক্ষিপ্তভাবে দেখা দিয়েছে হুইট ব্লাস্ট রোগ।

রাজাপুর গ্রামের কৃষক আলতাফ মোল্লা ফরিদপুর প্রতিদিনকে বলেন, আমি চার একর জমিতে গম চাষ করেছি। হঠাৎ করেই গমের এ অবস্থা হয়েছে। গম দেখে মনে হচ্ছে যে পেকে গেছে। কিন্তু গমের শীষের মধ্যে কোন দানা নেই। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে কয়েক দফায় ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করেও কোন সুফল মেলেনি।

আরেক কৃষক উম্বার মোল্লা  ফরিদপুর প্রতিদিনকে বলেন, ‘সমিতি থেকে ঋণ করে টাকা এনে ৮ হাজার টাকায় এক বিঘা জমি লিজ নিয়ে গম চাষ করেছি। এখন দেখছি সব গম নষ্ট হয়ে গেছে। এখন ঋণের কিস্তি দিবো কি দিয়ে আর সংসার চালাবো কি দিয়ে। এ গমের এখন একটাকাও মূল্য নেই। এসব গম কেটে জমি পরিষ্কার করার জন্য যে টাকা খরচ হবে সেই টাকাটাও বৃথা যাবে।’

কৃষক মিলন সরদার বলেন, সরকারের কাছে দাবি, আমাদের আর্থিক সহযোগিতা করে কিছুটা হলেও ক্ষতি পুষিয়ে দিক।

রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, রাজবাড়ী জেলায় এবছর ১২ হাজার  ৯০০ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে। কৃষকদের আমরা পরামর্শ দিয়েছিলাম বারি ৩৩ জাতের বীজ বপন করতে। কারণ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গম গবেষণা কেন্দ্র থেকে উদ্ভাবিত বারি ৩৩ জাতটি ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী। কিন্তু অনেক জায়গাতেই কৃষকরা আমাদের পরামর্শ না মেনে নিজেদের পছন্দমতো পুরনো জাতের বীজ বপন করেন। ফলে কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে ব্লাস্ট রোগ আক্রমণ করেছে।

ব্লাস্ট আক্রমণের শুরুতেই আমরা কৃষকদের নাটিভো জাতীয় ছত্রাকনাশক প্রয়োগের পরামর্শ দিয়েছি। নাটিভো স্প্রে করে কিছু কিছু জায়গায় ব্লাস্ট প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে। আবার কিছু কিছু জায়গায় সম্ভব হয়নি। যেসব মাঠে এরইমধ্যে ব্লাস্ট আক্রান্ত হয়ে গম পেকে গেছে সেসব গম কেটে ফেলার জন্য আমরা পরামর্শ দিয়েছি। আর যেসব মাঠে গম কাঁচা আছে তাতে ব্যাপকহারে নাটিভো স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছি।

 ফরিদপুর প্রতিদিন
 ফরিদপুর প্রতিদিন
এই বিভাগের আরো খবর