শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১   ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ফরিদপুরে পেঁয়াজ বীজে লাভবান হওয়ার আশা চাষিদের

নিউজ ডেস্ক

ফরিদপুর প্রতিদিন

প্রকাশিত : ০৩:১৯ পিএম, ১২ মার্চ ২০২৩ রোববার

পেঁয়াজ বীজের উর্বর ভূমি ফরিদপুরে বাড়ছে এ বীজ আবাদের সংখ্যা। অন্য ফসলের তুলনায় বেশি দাম পাওয়ায় এ বীজ চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে পেঁয়াজ বীজ বিক্রি করে লাভবান হওয়ার আশা তাদের।

ফরিদপুর সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়ন। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে দেখা মিলবে শুধুই পেঁয়াজ বীজের কদম। চারদিকে সাদা আর সাদার সমারোহ। তবে কৃষকদের কাছে এটি ‘কালো সোনা’হিসেবে পরিচিত।

মূলত বীজটি অন্য ফসলের তুলনায় বেশি দামে বিক্রি হয় ও শুকানোর পর কালো দানায় পরিণত হয় বলেই একে কালো সোনা বলা হয়ে থাকে। এ এলাকার বেশিরভাগ কৃষকই এ পেঁয়াজ বীজের আবাদ করে থাকে।

দেশের যে কোনো অঞ্চলের উৎপাদিত বীজের তুলনায় ফরিদপুরের পেঁয়াজ বীজ উৎকৃষ্টমানের। ফলে এ জেলার পেঁয়াজ বীজের কদর রয়েছে সারা দেশে। এ ছাড়া এখানকার পেঁয়াজ বীজ বিক্রি হয় উচ্চমূল্যে। দেশের পেঁয়াজ বীজের মোট চাহিদার ৭০ ভাগ যোগান আসে এ জেলা থেকে। আর প্রতি মণ পেঁয়াজ বীজ বিক্রি হয় ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দরে।

এ বছর ফরিদপুর জেলায় রেকর্ডসংখ্যক পরিমাণ জমিতে পেঁয়াজ বীজের আবাদ করেছেন কৃষকেরা। মাটি ও আবহাওয়া পেঁয়াজ বীজের উর্বর ভূমি হওয়ায় এ জেলায় দিনকে দিন বাড়ছে এ বীজ আবাদের সংখ্যা।

গত বছর বীজ বিক্রি করে কৃষকেরা বেশ লাভবান হয়েছেন। এতে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পেঁয়াজ বীজের আবাদ করা হয়েছে। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, জেলায় এ বছর ১ হাজার ৮৬৭ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ বীজের আবাদ করা হয়েছে। যা থেকে প্রায় ৯৩৩ টন বীজ উৎপাদন হবে।

সদর উপজেলার অম্বিকাপুরের দেশসেরা পেঁয়াজ বীজ চাষি সাহিদা বেগম জানান, গত বছর আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলেও জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ বীজের আবাদ করে লাভের মুখ দেখেছিলেন তিনি। তাই এ বছর তিনি আরও অধিক জমিতে পেঁয়াজ বীজের আবাদ করেছেন।

কৃষকরা জানান, গত বছর একর প্রতি জমিতে খরচ হয়েছে দেড় লাখ টাকার মতো। প্রতি একরে গড়ে ৩০০ কেজি বীজ পাওয়া গিয়েছিল। এ ছাড়া গত বছর মৌসুমের শুরুতে পেঁয়াজ বীজ বিক্রি হয়েছিল ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা কেজি দরে। এ বছর বীজের দাম কিছুটা বাড়বে বলে মনে করছেন চাষিরা।

তারা আরও বলেন, এ বছর বীজ, সার ও সেচ কাজে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এ ছাড়া শ্রমিককের মজুরি বেশি হওয়ায় বীজ উৎপাদনে খরচ বেড়েছে। তবে সরকার বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করলে পেঁয়াজ ও পেঁয়াজ বীজের আবাদ আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন কৃষকরা।

আর জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদফতরের উপপরিচালক মো. জিয়াউল হক বলেন, জেলায় পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনে কৃষকদের উৎসাহ দিতে সরকার নানা উদ্যোগ গ্রহন করেছে। এ ছাড়া পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণের জন্য কৃষকদের সব প্রকার সহযোগিতা করা হচ্ছে।