শনিবার   ০৩ জুন ২০২৩   জ্যৈষ্ঠ ২০ ১৪৩০   ১৪ জ্বিলকদ ১৪৪৪

 ফরিদপুর প্রতিদিন
সর্বশেষ:
কেঁচো সারে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন গ্রামের অর্ধশতাধিক নারী চার জেলায় বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ, ২ বিভাগে বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস সৌদি আরবে পৌঁছেছেন বাংলাদেশের ৪৪ হাজার ১৫৬ হজযাত্রী করমুক্ত আয়সীমা পুরুষের সাড়ে ৩ লাখ নারীর ৪ লাখ টাকা রাজবাড়ীতে গড়ে উঠছে পারিবারিক পুষ্টি বাগান
২৫৩

বিষমুক্ত টমেটো চাষ করে কৃষক হারুনের অনন্য সাফল্য

প্রকাশিত: ১৪ মার্চ ২০২৩  

মাত্র ৫ বছর আগেও সঙ্কটে দিন কাটতো আর সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরাতো হারুন পাটোয়ারীর (৫০)। টুকটাক ফসল আবাদ করে যা আয় করতেন, তা দিয়ে সংসার চালাতে কষ্ট হতো। কিন্তু হুট করে নেওয়া এক উদ্যোগ বদলে দিলো তার জীবন। কিছু জমি বর্গা নিয়ে শুরু করেন বিষমুক্ত টমেটোর চাষ। ওই টমেটো বিক্রি করেই ঘুরে দাঁড়ান তিনি।

জানা গেছে, গত বছর টমেটো চাষে আড়াই লাখ টাকা লাভ হয় কৃষক হারুন পাটোয়ারীর। এবার আরও বেশি জমিতে টমেটো চাষ করেছেন। ফলে এ মৌসুমে পাঁচ লাখ টাকা লাভের স্বপ্ন দেখছেন পরিশ্রমী এই কৃষক। হারুন পাটোয়ারীর দেখাদেখি চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার উপাদী দক্ষিণ গ্রামের অর্ধশতাধিক কৃষক শুরু করেন টমেটোর চাষ। এতে তাদের সংসারেও এসেছে সচ্ছলতা। এ কারণে এখন এলাকাটি ‘টমেটো গ্রাম’ হিসেবে পরিচিত।

গত শনিবার (১১ মার্চ) উপাদী দক্ষিণ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের খালের পাশে বিরাট বিল। বিলটিতে একের পর এক টমেটোখেত। এসব খেতে পাতা বেরিয়ে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে কাঁচা, আধা পাকা ও পাকা টমেটো। কৃষকদের অনেকেই খেত থেকে টমেটো তুলছিলেন। কেউ কেউ ছিলেন খেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত।

কথা হয় বিষমুক্ত টমেটো চাষের প্রথম উদ্যোক্তা হারুন পাটোয়ারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, আগে টুকটাক বিভিন্ন ফসলের আবাদ করতেন, যা দিয়ে সংসার চালাতে বেগ পেতে হতো। ২০১৭ সালে কিছু জমি বর্গা নিয়ে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে শুরু করেন টমেটোর চাষ। টমেটো বিক্রি করে ওই বছর লাভ হয় ৫০ হাজার টাকা। এরপর টমেটো চাষের জমির পরিমাণ বাড়াতে থাকেন। বাড়তে থাকে লাভও। গত বছর দেড় একর জমিতে টমেটোর চাষ করেন। আড়াই লাখ টাকা লাভ হয়। ওই টাকায় সংসার ও ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ মিটিয়েছেন। জুগিয়েছেন বড় মেয়ের বিয়ের খরচও।

গত ডিসেম্বরে প্রায় আড়াই একর জমিতে উন্নত জাতের ১৫ হাজার টমেটোর চারা রোপণ করেন বলে জানান হারুন পাটোয়ারী। তিনি বলেন, আবহাওয়া ভালো ও পোকামাকড়ের উপদ্রব কম থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। এবার মৌসুম শেষে উৎপাদিত হবে ১ হাজার ২০০ মণের বেশি টমেটো। আনুষঙ্গিক খরচ মিটিয়ে পাঁচ লাখ টাকা লাভ থাকবে বলে আশা করছেন এই কৃষক।

হারুন পাটোয়ারী আরও বলেন, বিষমুক্ত হওয়ায় স্থানীয় ক্রেতাদের কাছে তার টমেটোর চাহিদা বেশি। আগামী ২০-২৫ দিনের মধ্যে খেতের সব টমেটো বিক্রি হয়ে যাবে।

হারুন পাটোয়ারীর দেখাদেখি আশপাশের হান্নান কবিরাজ, শামীম মিয়া, রাজু প্রধানীয়া, রাজ্জাক কবিরাজ, শহীদ গাজী, বারেক কবিরাজসহ অর্ধশতাধিক কৃষক বিষমুক্ত টমেটো চাষ করছেন। তাঁদের সংসারেও এসেছে সচ্ছলতা। তারা বলেন, হারুন পাটোয়ারীর কারণে গোটা গ্রাম এখন ‘টমেটো গ্রাম’ হিসেবে পরিচিত।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আয়েত আলী বলেন, বিষমুক্ত টমেটো চাষ করে ওই এলাকায় হারুন কৃষিক্ষেত্রে যে সাফল্য দেখিয়েছেন, তা অনন্য।

 ফরিদপুর প্রতিদিন
 ফরিদপুর প্রতিদিন
এই বিভাগের আরো খবর