শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০   ২০ রমজান ১৪৪৫

 ফরিদপুর প্রতিদিন
২৪২

ফরিদপুরে ‘মুড়িকাটা’পেঁয়াজ আবাদে ব্যস্ত কৃষক

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০২২  

শীত মৌসুমে বাজারের পেঁয়াজের চাহিদা পূরণে ফরিদপুরে ‘মুড়িকাটা’আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। এ মৌসুমে ৪ হাজার ৫শ ৫৮ হেক্টর জমিতে আবাদ হবে এ পেঁয়াজ । বন্যার পানি খেত থেকে নেমে যাওয়ার পরপরেই মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষের জন্য প্রস্তুত করছেন তারা।

সরেজমিনে ফরিদপুরের সদর উপজেলার অম্বিকাপুর, চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, চাষিরা কেউ মুড়িকাটা পেঁয়াজের জন্য খেত প্রস্তুত করছেন, যারা আগর (আগে ভাগে) আবাদ করেছিল তারা চারা গাছকে যত্ন নিচ্ছেন। কেউ বা চারা গাছে কিটনাশক দেয়ার কাজ সেরে নিচ্ছেন ।

অম্বিকাপুর মাঠে কাজ করছিলেন চাষি মো. রাজর হোসেন। তিনি জানান, আগর মুড়িকাটা পেঁয়াজের (লাইট) ছোট পেঁয়াজ রোপণ করেছিলাম, ভাল হয়েছে তবে ঘাস হয়েছে অনেক। এখন পৈরেতের (শ্রমিকের) দর অনেক বেশি। এবছর সব কিছুর দর বৃদ্ধি পাওয়ায় খেত-খামারি করতে ব্যয়ও হচ্ছে বেশি।

এই মাঠের খেতে কীটনাশক ছিটানোর কাজ করছেন কৃষক ফরহাদ শেখ। তিনি বলেন, গত বছর এক বিঘায় যে কিটনাশক দেয়া হয়েছিল, এবার সেই পরিমাণ দিতে গেলে প্রায় দ্বিগুণ খরচ বেড়েছে। এখন আমাদের এ পেঁয়াজ বাজারে ভাল দর না পেলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ত হবে।

চরমাধবদিয়ার আবজালমন্ডলের ডাঙ্গীর এলাকার চাষি তুহিন মন্ডল জানান, একর প্রতি এই পেঁয়াজ উৎপাদনের ব্যয় হয় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা । কিন্তু, এবারের ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকায়। বাজারে বিদেশি পেঁয়াজের আমদানি স্বাভাবিক থাকলে প্রতি একরে যে পেঁয়াজ আমরা উৎপাদন করতে পারবো সেটা বিক্রি করতে পারবো লক্ষাধিক টাকা।

এদিকে, জেলার বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর গ্রামের পেঁয়াজ চাষি আশুতোষ মালো জানান, বাজারের সার, কীটনাশক, লাইট পেঁয়াজ (বীজ) এর দর বেড়ে যাওয়ায় এবার উৎপাদন খরচ তুলনামূলকভাবে বেড়েছে। তাই আমাদের দাবি সরকার বিদেশি পেঁয়াজ কম আমদানি করলে চাষিদের পুঁজি উঠবে ঠিকঠাক মতো।

ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ খরচ তুলনামূল একটু বেশি হলেও অল্প সময়ে এই ফসল ঘরে তোলা যায় । বছরের এই সময়ে (শীত মৌসুমে) সারা দেশেই পেঁয়াজের ঘাটতি থাকায় মুড়িকাটার চাহিদা থাকে বেশ। এসময় ভাল দরও পায় চাষিরা। আর এই জন্যই চাষিরা বর্ষা মৌসুমের পরপরই চাষাবাদ শুরু করে মুড়িকাটা পেঁয়াজের।

তিনি আরো বলেন, আবহাওয়া ভাল থাকলে পেঁয়াজের উৎপাদন ভাল হবে, তবে বিদেশি পেঁয়াজের আমদানি কম করতে হবে, তবেই আমরা লাভবান হবো।’

এদিকে, ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ জিয়াউল হক বলেন,‘চলতি মৌসুমে চাষিরা মুড়িকাটা পেঁয়াজের চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছে, এ পেঁয়াজ বাজারের চাহিদা অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করে। চলতি মৌসুমে ফরিদপুরে ৪ হাজার ৫শ ৫৮ হেক্টর জমিতে এ পেঁয়াজের আবাদ হবে আশা করা যাচ্ছে।’

 ফরিদপুর প্রতিদিন
 ফরিদপুর প্রতিদিন
এই বিভাগের আরো খবর