শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০   ২০ রমজান ১৪৪৫

 ফরিদপুর প্রতিদিন
১৯৩

করোনায় ইউরোপে প্রতি ১৭ সেকেন্ডে একজনের মৃত্যু

প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০২০  

মহামারি করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় দফার সংক্রমণে বিপর্যস্ত ইউরোপ। মহাদেশটিতে প্রতি ১৭ সেকেন্ডে ভাইরাসে আক্রান্ত একজনের মৃত্যু হচ্ছে। চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো। সামনের ৬ মাস আরো কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করতে হবে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। নতুন ধাক্কা এড়াতে লকডাউন শিথিলে তাড়াহুড়ো করতেও নিষেধ করেছে সংস্থাটি।

বৃহস্পতিবার ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনের এক অনুষ্ঠানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপীয় অঞ্চলের পরিচালক হ্যানস ক্লুজ বলেন, গত দুই সপ্তাহে ইউরোপে করোনায় মৃতের সংখ্যা ১৮ শতাংশ বেড়েছে। বর্তমানে অঞ্চলটিতে দৈনিক প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

প্রথম দফা সংক্রমণের প্রভাব সামাল দিতে থাকা ইউরোপীয় দেশগুলোতে নতুন করে বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। গত বুধবার ইতালিতে নতুন করে মৃত্যু হয়েছে ৭৫৩ জনের। দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ শুরুর পর এটাই একদিনে সবচেয়ে বেশি মৃতের সংখ্যা। আর পোল্যান্ডে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো রেকর্ড সংখ্যক মৃত্যু নথিবদ্ধ হয়েছে। বৃহস্পতিবার দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৬৩৭ জনের। এছাড়া অঞ্চলটির অন্যান্য দেশগুলোতেও সংক্রমণ বাড়ছে।

আর তার প্রভাব পড়ছে অঞ্চলটির দেশগুলোর স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর। হ্যানস ক্লুজ জানান, টানা গত দশ দিন ধরে ফ্রান্সের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রগুলোর ৯৫ শতাংশের বেশি পূর্ণ রয়েছে। সুইজারল্যান্ডের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রগুলোর শতভাগ পূর্ণ রয়েছে।

তবে উপমহাদেশ জুড়ে বর্তমানে আরোপ থাকা বিধিনিষেধের কারণে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা গত সপ্তাহে ২০ লাখ থেকে কমে ১৮ লাখে দাঁড়িয়েছে বলে জানান ডব্লিউএইচও কর্মকর্তা হ্যানস ক্লুজ। তিনি বলেন, ‘এটা একটা ছোট সতর্ক বার্তা, কিন্তু তারপরও সতর্কতা নয়।’ ক্লুজ বলেন, ‘আমি কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের ব্যাপকতার মাত্রার ভিত্তিতে একটি স্তর ক্রমিক ব্যবস্থা প্রণয়ণে উৎসাহ যোগাচ্ছি, যেখানে প্রতিটি স্তরে আনুপাতিক হারে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বিবেচনা করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘ভাইরাসটি দুর্বল মানুষের ওপর বেশি তেজি হয়ে ওঠে, সন্দেহজনক পরিস্থিতি কিংবা সিদ্ধান্ত নিতে সরকার দেরি করলে এটা আরো মারাত্মক হয়ে ওঠে।’

সাম্প্রতিক লকডাউনেও বেশিরভাগ ইউরোপীয় দেশ স্কুল খোলা রাখার প্রতি ইঙ্গিত করে ডব্লিউএইচও কর্মকর্তা ক্লুজ বলেন, এসব দেশকে অবশ্যই নিরাপদ শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। করোনার দুটি ভ্যাকসিন কার্যকর হওয়ার খবর নতুন মাত্রা যোগ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন কোভিড-১৯ সম্পূর্ণ থামাতে পারবে না আর আমাদের সব প্রশ্নের জবাবও দিতে পারবে না তারপরও ভাইরাসটি মোকাবিলার লড়াইয়ে এটি চরম আশা জাগিয়েছে।’

ইউরোপীয় অঞ্চলে ডব্লিউএইচও’র শীর্ষ কর্মকর্তা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ভ্যাকসিন ‘কোনও রুপালি বুলেট’ নয়। কেননা এগুলোর সরবরাহ এবং বিতরণ হবে সীমিত, বিশেষ করে প্রাথমিক অবস্থায়। ক্লুজ বলেন, ‘আমরা জানি আসন্ন শীতকালে ভ্যাকসিন পেতে বিলম্ব হয়ে যাবে, ফলে আমাদের সত্যিকার অর্থে যৌথভাবেই কঠোর হতে হবে আর যেসব পদক্ষেপে কাজ হচ্ছে বলে জানতে পারছি সেগুলো দীর্ঘ মেয়াদে বাস্তবায়ন করতে হবে।’ নিজে আশাবাদী থাকার কথার জানিয়ে ডব্লিউএইচও’র এই পরিচালক বলেন, ‘তারপরও আমাদের খুবই সতর্ক থাকতে হবে কারণ আমরা দেখতে পেয়েছি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা খুব দ্রুতই ভেঙে পড়তে পারে।’

 ফরিদপুর প্রতিদিন
 ফরিদপুর প্রতিদিন
এই বিভাগের আরো খবর